মহসীন কবির: ঈদের আগে নিত্যপণ্যের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও ঈদের পর হু হু করে বাড়ছে। প্রতিটা পণ্যের কম-বেশি বেড়েছে। তবে মুগীর দাম সামান্য কমেছে। বেশি বেড়েছে পেঁযাজ ও সবজির দাম। শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি বাজার ঘুরে এসব চিত্র দেখা গেছে।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে প্রায় প্রতিটি সবজিতে দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সবজি বিক্রেতারা।
বাজারগুলোতে প্রতি কেজি করলা ৭০ টাকা, বেগুন ৫০-৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, লতি ৮০-৯০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা ও টমেটো ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শসা ৫০ টাকা, কহি ৬০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, সজনে ডাটা ১০০-১২০ টাকা। এছাড়া বাজারে প্রতি পিস চালকুমড়া ৫০ টাকা ও লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। চিচিংগা ৬০-৭০ টাকা কেজি। ডাটা-২০-৩০ টাকা আটি।
দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেরও। খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। পাইকারি পর্যায়ে যা কেনাবেচা হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, রোজায় সবজির দাম কম থাকলেও, ঈদের পর থেকেই বাজার চড়া। তাদের দবি দাম কমাতে বাজার মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে।
এদিকে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে যেখানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়, সেখানে আজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পেঁয়াজ বিক্রেতা রফিক বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি হালি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে দাম। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে। কেউ কেউ বলছেন, আড়তে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৬-৪৮ টাকায়। মূলত কৃষকরা পেঁয়াজ মজুত করায় সরবরাহ কমছে। এতে দামে প্রভাব পড়েছে।
এদিকে, দাম বাড়ানোর পর বাজারে সরবরাহ বেড়েছে ভোজ্যতেলের। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৯ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৬৯ টাকা ও পাম তেল ১৬৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের জন্য গুনতে হচ্ছে ৯২২ টাকা।
অস্থিরতা কমেনি চালের বাজারে। প্রতি কেজি মিনিকেট ৮৬-৯০ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা ও নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।
তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে আলুর দাম। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর জন্য গুনতে হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর প্রতিকেজি আমদানি করা রসুনের জন্য ১৮০ থেকে ২১০ ও দেশি রসুনে গুনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
তবে গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম। কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কেজিতে ২০-৩০ টাকা কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৭০ টাকায়।
এছাড়া দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।
মুরগির দাম কমলেও বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এছাড়া ডিমের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০-১২৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কিছুটা বেড়েছে মাছের দাম। প্রতি কেজি রুই ৩০০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭৫০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা ও শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।