ডেস্ক রিপোর্ট: মাথায় লাল-সবুজের পতাকা বাঁধা ১৬ বছরের কিশোর রিকশার পাদানিতে ঝুলছে। রিকশাচালক এগিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত শহীদ গোলাম নাফিজের এ দৃশ্যটি কাঁদিয়েছে গোটা জাতিকে। ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গত বছরের ১৮ জুলাই রাজপথে নেমে পায়ে কয়েকটি রাবার বুলেট লাগে তার। তবে গুলির আঘাতে হওয়া ক্ষত থামাতে পারেনি তাকে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায়ই আন্দোলন চালিয়ে যায় সে।
এরপর ৪ আগস্ট এক দফার আন্দোলনে অংশ নিয়ে ফার্মগেটে গুলিবিদ্ধ হয় নাফিজ। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিকশাসহ তাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দিতে চায়। পরবর্তী সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যায় সে।
এসব তথ্য জানিয়েছেন শহীদ নাফিজের ভাই গোলাম রাছেল এবং রিকশাচালক নূর মোহাম্মদ।
জানা যায়, ১৮ জুলাই ছাত্র-জনতার সঙ্গে মহাখালীতে আন্দোলনে অংশ নেয় নৌবাহিনী কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী গোলাম নাফিজ। সেদিন মহাখালীতেই পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট লাগে নাফিজের পায়ে। তখন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যায় সে। গুলির ক্ষত তাকে আরো বেশি সাহসী করে তোলে। আন্দোলনে ছিলেন নাফিজের বড় ভাই রাছেলও। এরই মাঝে আন্দোলন যখন এক দফায় রূপ নেয়, তখন নাফিজের সঙ্গে আন্দোলনে যুক্ত হতে চেয়েছিলেন বাবা মো. গোলাম রহমান ও মা নাজমা আক্তার।
রাছেল জানান, ৪ আগস্ট মহাখালীর বাসা থেকে ৩০ টাকা নিয়ে মাকে সালাম করে বিদায় নেয় নাফিজ। বলেছিল বাসার আশপাশেই থাকবে। কিন্তু বাসা থেকে বেরিয়েই আন্দোলনস্থলের উদ্দেশে রওনা দেয় বন্ধুদের সঙ্গে। বাবার কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়ে পথিমধ্যে লাল-সবুজের পতাকা কিনে মাথায় বেঁধে নেয়। বন্ধুদের নিয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার সঙ্গে যুক্ত হয় সে। এরপর ফার্মগেটের দিকে চলে যায় তারা।