গাইবান্ধা: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জামায়াতের মিছিলে গুলিবর্ষণে হত্যা চেষ্টা ও ভাংচুরে অভিযোগে সাবেক এমপিসহ ২শ’ ২১ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১১ বছর পর মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ থানায় ১৯ এপ্রিল সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, পৌর কাউন্সিলর, ইউপি চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের বেড়া মালঞ্চা গ্রামের ছলিম উদ্দিনের ছেলে জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম মামলা করেন।
মামলায় গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান যথাক্রমে শাকিল আকন্দ বুলবুল ও আব্দুল লতিফ প্রধান, সাবেক পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি ও আতাউর রহমান সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেস আলী বাদু ও সহ-সভাপতি জাকারিয়া ইসলাম প্রধান জুয়েল, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ.র.ম শরিফুল ইসলাম জর্জ, তহিদুল ইসলাম প্রধান শাহিন, আনোয়ারুল ইসলাম প্রধান, খ ম সাজু, মাসুদ আলম মন্ডল, তৌকির হাসান রচি ও আতিকুর রহমান আতিক,
সাবেক পৌর কাউন্সিলর শাহিন আকন্দ, জয়নাল আবেদীন, মিজানুর রহমান রিপন, মাসুদ রানা বাপ্পি ও মাজেদুল ইসলাম, গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল হান্নান আজাদসহ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ২শ’ ২১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জামায়াত থেকে নির্বাচিত তৎকালীন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নূরুন নবী প্রধান ভাইস চেয়ারম্যানের পদে যোগদান করার উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বিজয় মিছিল সহকারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের দিকে যাচ্ছিলেন। মিছিলটি পৌর শহরের বিএম গার্লস হাইস্কুল এলাকায় পৌঁছলে সাবেক এমপি আবুল কালম আজাদের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫০ থেকে ৬০ জন আওয়ামী সন্ত্রাসী পিস্তল, রিভলভার, হাত বোমা, সাউন্ড গ্রেনেড, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নূরুন নবী প্রধান ও বাদী আজাদুল ইসলামসহ মিছিলে অংশ নেয়া জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের বিজয় মিছিলে হামলা করে। সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র অবস্থায় জামায়াত অফিসে গিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। তাদের হামলায় মামলার বাদি ও জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়। পরে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আহতদেরকে উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পলাশবাড়ি, বগুড়া ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মামলার বাদি জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা সকলেই সন্ত্রাসী হওয়ায় তাদের ভয়ে এ ঘটনায় ওই সময় থানায় মামলা নেয়া হয়নি।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলার এজাহার নামীয় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে জোর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।