আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেদিন থেকেই তিনি একের পর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ফেডারেল ব্যয় কমাতে সরকারি কর্মীদের ছাঁটাই থেকে শুরু করে সংস্থা বন্ধ, বিশ্বব্যাপী শুল্কারোপ, অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন এবং গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধনীতি সব ক্ষেত্রে নিজ ক্ষমতা প্রয়োগ করেছেন তিনি।
তার এসব কর্মকাণ্ড নিজ দেশের বাসিন্দাদের মনে তৈরি করেছে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, যা তার কর্মদক্ষতার ক্ষেত্রে অনুমোদনের মাত্রা সর্বনিম্ন স্তরে নামিয়ে এনেছে। অর্থাৎ, জনপ্রিয়তা কমেছে তার। সাম্প্রতিক জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
গত সোমবার রয়টার্স/ইপসোস করা ছয় দিনের এক জরিপে দেখা গেছে, এখন মাত্র ৪৩ শতাংশ আমেরিকান তাকে সমর্থন করেন। তার এই পতনের পেছনে উঠে এসেছে নানাবিধ তথ্য, যার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে অর্থনৈতিক উদ্বেগ।
অর্ধেকেরও বেশি নাগরিক মনে করেন ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে। ৫১ শতাংশ জনগণ মুদ্রাস্ফীতির কবলে পড়ার জন্য প্রস্তুত বলে মত দিয়েছেন। এরপর আছে শুল্কারোপের ঘটনা। ৫২ শতাংশ জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী এভাবে শুল্কারোপের প্রতি সম্মতি নেই তাদের। কারণ, এটি অর্থনীতির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি এবং ইয়েমেনে সামরিক হামলার বিষয়টি নিয়ে ‘সিগন্যাল চ্যাটের’ গোপন তথ্য ফাঁস আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে। ৬০ শতাংশ মানুষ অর্থনীতিবিষয়ক নেতিবাচক সংবাদ শুনছেন। অভিবাসন সম্পর্কে ৪৫ শতাংশ উত্তরদাতা ট্রাম্পের কর্মক্ষমতাকে সমর্থন করেছেন; কিন্তু ৪৬ শতাংশই তাকে অস্বীকার করেছেন।
এদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রায় ৪২ শতাংশ ট্রাম্পের কর্মক্ষমতাকে সমর্থন করছেন। তবে গত তিন সপ্তাহ আগে রয়টার্স/ইপসোস করা জরিপের চেয়ে ৪৩ শতাংশ কম এবং ক্ষমতা নেওয়ার পরের সময়গুলো থেকে ৪৭ শতাংশ কম।
এই জরিপে অংশ নেওয়া ৪ হাজার ৩০৬ উত্তরদাতার মধ্যে ৮৩ শতাংশ বলেছেন, অনিচ্ছায় হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ফেডারেল আদালতের রায় মেনে চলতে হবে। কারণ, আদেশ অমান্য করে ভেনিজুয়েলার অভিবাসীদের এ দেশ থেকে বিতাড়ন করে তৃতীয় দেশে পাঠিয়েছেন ট্রাম্প।
এক-তৃতীয়াংশ রিপাবলিকান সমর্থকের বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিচালনা প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট একমত না হলে সেখানে ফেডারেল তহবিল স্থগিত করা যুক্তিসংগত।
উত্তরদাতাদের ৬৬ শতাংশ বলেছেন, তারা মনে করেন না যে, জাতীয় জাদুঘর ও থিয়েটারের মতো শীর্ষস্থানীয় সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ প্রেসিডেন্টের হাতে থাকা উচিত। তবে রিপাবলিকান উত্তরদাতাদের ৫৩ শতাংশ, অর্থাৎ বেশিরভাগই মনে করেন ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে প্রার্থী হওয়া উচিত নয়।