কাশ্মীরের পহেলগামে জঙ্গি হানায় ২৬ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা দেশ। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী, সর্বত্রই দাবি একটাই, প্রত্যাঘাতের। এবার পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে কঠোর জবাবের ইঙ্গিত দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও ।
এদিন তিনি বলেন, ‘একজন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে সৈন্যদের পাশাপাশি দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমার দায়িত্ব। যারা আমাদের দেশে আক্রমণ করার সাহস করে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া আমার দায়িত্ব। দেশের লোক যেমন ভাবে চাইছে তেমন ভাবেই জবাব দেওয়া হবে।’
এদিন নয়াদিল্লির একটি অনুষ্ঠান থেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই বার্তা দেওয়ার কিছু পরেই পঞ্জাবের ফিরোজপুরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় দেখা গেল যুদ্ধের প্রস্তুতি! স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত টানা ৩০ মিনিট এলাকার আলো বন্ধ রেখে চলল ‘ব্ল্যাকআউট’-এর মহড়া! সাধারণত, যুদ্ধের সময় বা প্রস্তুতি হিসেবে দেখা যায় এই মহড়া।
রাজনাথের ‘হুঁশিয়ারি’ এবং তার পরে পরেই বাহিনীর এই ‘তৎপরতা’ দেখে পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, পাকিস্তানকে শীঘ্রই যোগ্য জবাব দিতে পারে ভারত। বস্তুত, দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও জঙ্গিদের খুঁজে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে ইতিমধ্যেই চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে তিন বাহিনী।
রবিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী বাসভবনে এয়ার চিফ মার্শালের সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। ৯০ মিনিটের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংও। তারপরই দিল্লির একটি অনুষ্ঠান থেকে পহেলগাম কাণ্ডে প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এদেশের দিকে চোখ তুলে তাকালে ছেড়ে কথা বলা হবে না।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার দুপুরের বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীকে ‘সম্পূর্ণ অভিযানে স্বাধীনতা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। অর্থাৎ সেনা বাহিনী নিজেরাই নির্ধারণ করবে সঠিক সময়, পদ্ধতি এবং লক্ষ্য- কখন ও কীভাবে পহেলগাম হামলার জবাব দেওয়া হবে।
এরপরই রাতে পঞ্জাবের ফিরোজপুরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় দেখা গেল যুদ্ধের প্রস্তুতি, বাহিনীর ‘ব্ল্যাকআউট’-এর মহড়া! বাহিনীর নির্দেশ মেনে টানা ৩০ মিনিট এলাকার আলো বন্ধ রাখে প্রশাসন। এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও সহযোগিতাও চেয়েছে প্রশাসন।
গত ২২ এপ্রিল দুপুর আড়াইটে নাগাদ গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে কাশ্মীরের পহেলগাম। বৈসরন উপত্যকায় ঘুরতে গিয়ে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ যায় স্থানীয় এক পোনি চালক-সহ ২৬ জনের। ঘটনায় পাক যোগ স্পষ্ট হলেও গোড়া থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। প্রতিবাদে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত-সহ একাধিক পদক্ষেপ করেছে ভারত। পাল্টা হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটিয়েছে। এমন আবহে ক্রমেই জোরাল হচ্ছে প্রত্যাঘাতের দাবি। এবার দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও জানিয়ে দিলেন, দেশবাসীর ইচ্ছা পূরণ হবে শীঘ্রই। সূত্র:দ্য ওয়াল