সারমিন জাহান: শেয়ারবাজারে টানা ৯ কর্মদিবসে কমার পর কিছুটা বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছিল ২৩৩ পয়েন্ট। বেড়েছে ২৩ পয়েন্ট।
ফলে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উঠে এসেছে প্রায় ৫ হাজার পয়েন্টে। দিনশেষে সূচক দাঁড়িয়েছে ৪ হজার ৯৯৫ পয়েন্টে।
শেষ দেড় ঘণ্টায় সূচক বাড়লেও পতন দিয়েই শুরু হয় দিনের লেনদেন। প্রথম আধ ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসই সূচকের পতন ঘটে ৫০ পয়েন্টের। এ সময়ে বেশিরভাগ কোম্পানিরই শেয়ারের দরের পতন ঘটে।
এরপর সূচকের সামান্য বৃদ্ধি হলেও আগের দিনের তুলনায় পতনমুখী ধারায়ই ছিল বাজার। কিন্তু বেলা ১টা থেকে সে পতনের ধারা থেকে বের হয়ে আসতে শুরু করে এবং লেনদেনের শেষ অবধি উর্ধ্বমুখী ধারায় শেষ হয় দিনের লেনদন। ফলে টানা ৯দিনের পতন শেষে সূচক বৃদ্ধিতে শেষ হলো দিনের লেনদেন।
শেষ দেড় ঘণ্টায় সূচকের এমন ম্যাজিক উর্ধ্বগতির পেছনে রয়েছে বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের গুঞ্জন! আগামী ৫ মে থেকে ১১দিনের সফরে তিনি প্রথমে আমেরিকা ও পরে কাতারে যাবেন। পুঁজিবাজার বিষয়ক দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিবেন তিনি। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তার এ সফরের সব ধরনের ব্যয় বহন করবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত ২০ এপ্রিল তার এ সফরের অনুমোদন দিয়েছে। সফরসূচি অনুযায়ী, আগামী ৫ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত তিনি আমেরিকায় অনুষ্ঠিতব্য ৩১তম ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট গ্রোথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামে এবং ১২ থেকে ১৫ মে কাতারে অনুষ্ঠিত আইএসকোর ৫০ তম বার্ষিক অনুষ্ঠানে ও ‘কিউএফএমএ পাবলিক কনফারেন্সে যোগ দেবেন। ধারাবাহিক দরপতন পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব
বিনিয়োগকারীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন তখন তার এ সফরকে ঘিরে বাজারে বেশ সমালোচনা তৈরি হয়েছে। তবে গতকাল বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে তার এই সফরকে কারণ হিসাবে বলেছেন ডিএসইর একজন পরিচালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আমার দেশকে বলেন, বর্তমান পতনমুখী বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর কোন কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। তবে বিএসইসি চেয়ারম্যান বিদেশ সফরে গিয়ে আর দেশে ফিরবেন না-এধরনের নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। আর এরইপ্রেক্ষিতে বাজারে সূচক বেড়েছে। এর আগেও নানা সময়ে চেয়ারম্যানের পদত্যাগের গুঞ্জনে বাজারে সূচক বেড়েছিল।
তবে বিভিন্ন সূত্র জানায়, বড় ধরনের দরপতনের কারণে বাজারে আতংক ছড়িয়ে পড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ারক্রয়ে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হওয়ার কারণে বাজারে সূচক বেড়েছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে এ ধরনের কোন নির্দেশনা দেওয়া হয় না বলে জানিয়েছেন বিএসইসির মুখপাত্র ও পরিচালক আবুল কালাম। বাজার হস্তক্ষেপের বিষয়ে তিনি আমার দেশকে জানিয়েছেন, আগে কমিশন থেকে স্টিক এক্সচেঞ্জ বা ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে নানা ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হতো। বর্তমান কমিশন এ ব্যাপারে কোন ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। মার্কেট তার নিজস্ব গতিতে চলছে।
এর আগে টানা ৯ দিনের দরপতনে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সুচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। ধারাবাহিক দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেমে আসে বড় ধরনের হতাশা। পুঁজির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা উদ্বিগ্ন উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছেন।