ঈদের পর সরবরাহ সংকটের অজুহাতে হঠাৎ বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। পরিস্থিতি এমন- এক কেজি পাঙাশ কিনতে ক্রেতার ২০০-২২০ টাকা গুনতে হচ্ছে, যা ঈদের আগেও ১৮০-১৯০ টাকা ছিল। পাবদা, টেংরা, রুইসহ বেশির ভাগ মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজি ও মাছের বাড়তি দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, পটল ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৩০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুর লতি কেজি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বেগুন ৯০ টাকা, পেঁপে ও শিম ৬০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, শসা ৬০ এবং সজিনা প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে আরিফুল নামে এক ক্রেতা বলেন, রমজান মাস জুড়েই সব ধরনের সবজি কিনেছি কম দামে। কিন্তু ঈদের পর হঠাৎ সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বেশির ভাগ সবজি এখন প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা, কিছু সবজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ এলাকার সবজি বিক্রেতা মনোয়ার হোসেন মানু বলেন, মূলত এখন বেশ কিছু সবজির মৌসুম শেষ। এ ছাড়া কিছু কিছু সবজি কেবল উঠতে শুরু করেছে। যে কারণে বাজারে সবজি সরবরাহ তুলনামূলক কম। কিছুদিনের মধ্যে নতুন করে আবার সবজি উঠতে শুরু করবে তখন সবজির দাম আবার কমে আসবে।
এদিকে বাজারে মাছের দাম চড়া হওয়ায় অনেক ক্রেতা না কিনেই ফিরে যাচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর ঢাকায় মাছের চাহিদা বেড়েছে, কিন্তু সরবরাহ ঠিকমতো না থাকায় দাম বেড়েছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে নদীর দেশি চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা দুই সপ্তাহ আগেও ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা ছিল। চাষের চিংড়িও বেড়ে ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা হয়েছে। ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে টেংরা মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়।
শুধু চিংড়ি কিংবা টেংরা নয়, দেশি শিং ও শোল মাছের দামও চড়া। শিং ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, শোল ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমনকি পুঁটি মাছও বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বড় আকৃতির রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়ার মতো সাধারণ চাষের মাছও বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
রামপুরা বাজারের ক্রেতা নারগিস বেগম বলেন, বাজারে মাছের দাম অসহনীয়। এমন দাম দিয়ে সপ্তাহে একবার মাছ কেনাও কষ্টকর। এখন মাছ খাওয়া যেন বিলাসিতায় রূপ নিয়েছে। বাসায় বাচ্চারা ছোট মাছ খেতে চায়, কিন্তু বাজারে পাবদা বা শিংয়ের দাম শুনে কেবল আফসোসই করা যায়।