ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কুলিকুন্ডা গ্রামের অন্যতম অকর্ষণ শুঁটকি মেলা। প্রতি বছরের বৈশাখে এ মেলায় শুঁটকির পরসা সাজিয়ে বাসে দূরদুরান্ত থেকে আসা দোকানিরা। মেলার শুরু দিকে পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে শুঁটকি মিললেও বর্তমানে টাকা দিয়েও কেনা যায় পণ্য।
শত বছরের ঐতিহ্যের ধারক কুলিনকুন্ডা শুঁটকি মেলায় নেই কৃত্রিম আনুষ্ঠানিকতা নেই। আছে শেকড়ের গভীরে লালিত প্রাণের স্পন্দন। ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলার শুরুতে কিছুক্ষণের জন্য চলে বিনিময় প্রথা।
প্রতি বছরের ন্যায় চলতি বছরেও কুলিকুন্ডা গ্রামের উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে বসেছে কুলিনকুন্ডা শুঁটকি মেলা। মঙ্গলবার সকালে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি শোল, বোয়াল, গজার, টেংরা ও পুঁটিসহ বিভিন্ন ধরনের শুঁটকি নিয়ে বসেছেন দোকানিরা। এ মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের জমিতে বসেছে লৌকজ মেলা।
কলিমকুন্ডা মেলা আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্কুল মাঠের পাঁচ একর জমিতে এবার মেলা বসেছে। দোকান বসানো হয়েছে অন্তত ৫০০। এবারের মেলায় তিন কোটি টাকার কেনাবেচা হবে বলে আশা তাদের।
শুঁটকি দোকানি নারায়ণ দাস বলেন, ‘আশা করছি, এবার তুলনামূলকভাবে ক্রেতা বেশি হবে। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় এক সময় পণ্য বিনিময় প্রথা হতো। এখন নামে মাত্র বিনিময় প্রথা হয়।’
মেলায় আসা ক্রেতা মো. লোকমান মিয়া বলেন, ‘প্রাচীনকালে যখন কাগজের মুদ্রা প্রচলন হয়নি ঠিক তখন থেকে কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসলের বিনিময়ে কেনাবেচা করতেন। বিশেষ করে শুঁটকি ছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তবে কালের বিবর্তনে এ মেলার জৌলস অনেকটাই হারিয়েছে। হারিয়েছে চিরচেনা বিনিময় প্রথাও। তারপরেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলায় শুটকি কেনার জন্যে এসেছি।’