স্পোর্টস ডেস্ক: জিম্বাবুয়ের কাছে প্রথম টেস্টে চার দিনেই হেরে গেল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ৩ উইকেটে হেরে দু’টেস্টের সিরিজ়ে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়লেন নাজমুল হোসেন শান্তরা। জয়ের জন্য ১৭৪ রানের লক্ষ্যে জ়িম্বাবোয়ে পৌঁছে যায় দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে।
এমনিতেই লক্ষ্য ছিল মামুলি। জিম্বাবুয়ের জন্য ১৭৪ রানের টার্গেট ছোঁয়া ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। তারওপর শুরুতে বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিকরা। তবে শেষ দিকে মেহেদি হাসান মিরাজের ঘূর্ণি জাদুতে ফাইফার তুলে নিলে ম্যাচের চিত্রনাট্য পাল্টে যাচ্ছিল। কিন্তু জয়ের আভাস মিললেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি স্বাগতিকরা। পঞ্চম দিনেও গড়ায়নি লাল বলের মাঠের লড়াই। লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে খেলায় ফিরলেও প্রথম টেস্টের ভাগ্য নির্ধারণ হয়েছে চতুর্থ দিনেই। ক্রেইগ আরভিনের দল জিতল ৩ উইকেটের। এতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ হার দিয়ে শুরু করল টাইগাররা। আর আফ্রিকান দলটি এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
২০২১ সালের পর এই প্রথম টেস্টে জয়ের দেখা পেল জিম্বাবুয়ে। আর বাংলাদেশের মাটিতে তারা টেস্টে জিতল ২০১৮ সালের পর। সর্বশেষ তারা টাইগারদের বিপক্ষে জিতেছিল সিলেটের এ মাঠেই।
উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়ের জয়ের ভিত গড়ে দেন ব্রায়ান বেনেট (৫৪) আর বেন কারান (৪৪)। ১২৬ বলে দুজনে গড়েন ৯৫ রানের দুর্বার এক ওপেনিং পার্টনারশিপ। জিম্বাবুয়ের বাকি ব্যাটাররা মিরাজের ঘুর্ণি বিষের ধকল সামলে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সেরেছে মাত্র। তাতে ৭ উইকেট হারিয়ে সফরকারীরা ছুঁয়ে ফেলে লক্ষ্য। মিরাজ প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও পাঁচ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংস মিলে তার উইকেট হলো দশটি। তার সঙ্গে তাইজুল পেয়েছেন দুটি উইকেট।
সিলেট টেস্টের চতুর্থ দিনের শুরুটা ছিল বড়ই অশান্ত। জিম্বাবুয়ের বোলারদের সামনে যেন দাঁড়াতে পারছিলেন না বাংলাদেশের ব্যাটাররা। আগের দিনের অপরাজিত নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরে যান দ্বিতীয় বলেই। তারপর সাজঘরের পথ ধরেন মেহেদী হাসান মিরাজ (১১)। শেষে জাকির আলী অনিক ও হাসান মাহমুদের দৃঢ়তায় (৯১ বলে ৩৫) প্রথম সেশনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় খানিকটা থিতু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানের বেশি স্কোর করতে পারেনি টাইগাররা। তাতে জিম্বাবুয়ের সামনে জয়ের জন্য মাত্র ১৭৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় বাংলাদেশ। জাকের ১১১ বলে চার বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৫৮ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন। দারুণ বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ের পেসার ব্লেসিং মুজারবানি নিয়েছেন ৫ উইকেট। দুটি উইকেট পেয়েছেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে এক ওভার ব্যাট করে ৪ রান তুলে মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে গেছে জিম্বাবুয়ে।
তার আগে তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৯৪ রান তোলে স্বাগতিক দল। ৬০ রানে অপরাজিত থেকে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অধিনায়কের সঙ্গে ব্যাট করতে নামবেন জাকের আলী অনিক। আগের দিন ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। জবাবে ২৭৩ রানে থামে জিম্বাবুয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১৯১/১০।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস: ২৫৫/১০, ৭৯.২ ওভার (নাজমুল ৬০, জাকের ৫৮, মুমিনুল ৪৭, মাহমুদুল ৩৩, হাসান ১২, মিরাজ ১১, সাদমান ৪, মুশফিক ৪, তাইজুল ১; মুজারাবানি ৬/৭২, মাসাকাদজা ২/২০, নিয়াউচি ১/৪২, এনগারাভা ১/৭৪)।
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৭৩/১০, ৮০.২ ওভার (উইলিয়ামস ৫৯, বেনেট ৫৭, মায়াভো ৩৫, এনগারাভা ২৮*; মিরাজ ৫/৫২, নাহিদ ৩/৭৪, খালেদ ১/৩০, হাসান ১/৫৫)।
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস : ১৭৪/৭, ৫০.১ ওভার (কারান ৪৪, বেনেট ৫৪, ওয়েসলি মাধেবেরে ১৯; মিরাজ ৫/৫০ ও তাইজুল ২/৭০)।
ম্যাচসেরা: ব্লেসিং মুজারাবানি।