
২ কোটি ৪২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৮৩ টাকা থাকা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বিভিন্ন ব্যাংকের ২৩ হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিকে, নোয়াখালী-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মোহাম্মদ আলী, স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, মেয়ে সুমাইয়া আলী ঈশিতার এবং দুই ছেলে আশিক আলী ও মাহতাব আলীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশদিয়েছেন।কামরুল ইসলামের মামলায় দুদকের পক্ষে কমিশনের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান এসব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, কামরুল ইসলামের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এসব অস্থাবর সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর, বন্ধক বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন মর্মে তদন্তকালে বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এসব সম্পদ অবিলম্বে অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা আবশ্যক। এমতাবস্থায় এসব হিসাবসমূহ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
এর আগে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি কামরুল ইসলামের ১৫টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১৫ কোটি ১৮ লাখ ১৫ হাজার ৪৬৫ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেন একই আদালত।
উল্লেখ্য, গত ১৮ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা–১২ নম্বর সেক্টর থেকে কামরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১৯ নভেম্বর তাকে নিউমার্কেট থানার একটি হত্যা মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি হত্যা মামলা রয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
মোহাম্মদ আলীর মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সিফাত উদ্দিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, মোহাম্মদ আলী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎপূর্বক অবৈধ সম্পদ অর্জন, খাস জমি দখলের মাধ্যমে ৫ তলা স্থায়ী বাণিজ্যিক হোটেল নির্মাণ এবং সন্দেহজনক লেনদেন বা মানিলন্ডারিংসহ জ্ঞাতআয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা সপরিবারে দেশত্যাগ করে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমন রহিত করা প্রয়োজন।
মোহাম্মদ আলী ছাত্রজীবনে বামপন্থী রাজনীতিবিদ ছিলেন। পরে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলে। এরপর জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সমর্থন নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও ঋণখেলাপি হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস স্বতন্ত্র নির্বাচন করে হেরে যান। আয়েশা ফেরদাউস ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত সংসদ সদস্য। সর্বশেষ ২০২৪ সালে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে। পরবর্তীতে সরকার পতন হলে তিনি পদ হারান।